সায়েন্স ফিকশন ও টু: যুদ্ধ যখন অক্সিজেনের জন্য

মোহাম্মদ সাইফূল ইসলাম তথা শান্তির দেবদূতের সায়েন্স ফিকশন ও টু নিয়ে এই রিভিউটি এখানে এবং বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করেছি সংক্ষিপ্ত আকারে। লেখক পরিচিতি, বইটির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য এবং অন্যান্য খুঁটিনাটিসহ বিস্তারিত রিভিউটি পড়তে পারবেন Roar বাংলার এই লিঙ্ক থেকে।


মহেঞ্জোদারো সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধারকৃত একটি চ্যাপ্টা পাথরখণ্ড এসে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের হাতে। তার হাতের স্পর্শে উপরের পাথরের আবরণ ঝরে পড়ে ভেতর থেকে আত্মপ্রকাশ করে স্বর্ণের তৈরি অত্যন্ত জটিল এবং অত্যাধুনিক এক ডিভাইস।

ডিভাইসটির ভেতরে থাকা তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সেটি এমন এক সময়ের, যখন পৃথিবী জিম্মি অক্সিরেটদের হাতে। কারা এই অক্সিরেট? যারা পৃথিবীর প্রতিটি অক্সিজেনের অনু-পরমাণুকে নিয়ন্ত্রণ করে।

মানুষের জীবনধারণের জন্য অপহিরার্য এই অক্সিজেনকে কুক্ষিগত করেই টিকে আছে অক্সিরেটদের শোষণমূলক সমাজব্যবস্থা। কিন্তু একইসাথে তাদের বিরুদ্ধে দানা বেঁধে উঠছে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ। একদল স্বাধীনতাকামী অ্যান্টি-অক্সিরেট প্রস্তুতি নিচ্ছে বিদ্রোহ করার।

সময় পরিভ্রমণের মধ্য দিয়ে এমন সময় অবতার হিসেবে এক নভোচারী হাজির হয় তাদের মাঝে। সে কি পারবে অক্সিরেটদের বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলনকে পরিপূর্ণতা দিতে? নাকি এক তরুণীর প্রেম বাধা হয়ে উঠবে তার লক্ষ্য অর্জনে? তাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করবে অন্য কোনো গ্রহে, কিংবা অন্য কোনো সময়ে?

তারচেয়েও বড় কথা, এই ৫,০০০ বছর আগের মহেঞ্জোদারোর ধ্বংসাবশেষে এই অত্যাধুনিক ডিভাইস এলো কী করে? অক্সিজেন কুক্ষিগত করা, আলোর কাছাকাছি গতিতে গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে ঘুরে বেড়ানো, সময়ের মধ্য দিয়ে পরিভ্রমণ করা – এগুলো কোন সময়ের কাহিনী?

তবে কি অতীতে এমন কোনো উন্নত সভ্যতা ছিল, যারা উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছতে পেরেছিল? এরপর কোনো কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে? আমরা কি তাদেরই উত্তরসূরি?
১৯৬৯-এর উত্তাল দিনগুলোর মধ্য দিয়েই শুরু হয় চার অধ্যাপক বন্ধুর এক অবিশ্বাস্য জার্নি। তারা কি পারবে এই অমীমাংসিত প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে করতে? পারবে সেই হারিয়ে যাওয়া সভ্যতার কোনো নিদর্শন খুঁজে বের করতে?

জানতে হলে আপনাকে পড়তে হবে এবারের একুশে বইমেলায় নালন্দা থেকে প্রকাশিত মোহাম্মদ সাইফূল ইসলামের সায়েন্স ফিকশন ও টু। অক্সিজেনকে নিয়ে সংঘাতের কারণেই বইয়ের এই নামকরণ, যেখানে “ও টু” হচ্ছে অক্সিজেনের সংকেত (O2)।

বই রিভিউ, পাঠ পর্যালোচনা, বই থেকে নেওয়া বিভিন্ন আর্টিকেল সংক্রান্ত আমার সকল লেখা পড়ুন এই পাতা থেকে।

বেশ ভালো এবং জটিল কাহিনীর একটা সায়েন্স ফিকশন ও টু। একাধিক সাবপ্লট এখানে সমান্তরালে এগিয়ে গেছে। এবং শেষে একটা টুইস্টও আছে, যেটা মনোযোগী পাঠককেও চমৎকৃত করবে।

এটা লেখকের দ্বিতীয় বই হলেও সায়েন্স ফিকশনের জগতে লেখকের পদচারণা দীর্ঘদিনের। সামহোয়্যার ইন ব্লগে তিনি ‘শান্তির দেবদূত’ নামে দীর্ঘদিন লেখালেখি করেছেন। সেখানে সাই ফাই লেখক হিসেবে তার মোটামুটি ভালো জনপ্রিয়তা আছে।

আপনি যদি ভালো এবং মৌলিক সায়েন্স ফিকশন পড়তে আগ্রহী হন, তাহলে বইটা পড়তে পারেন। বইটি প্রকাশিত হয়েছে নালন্দা থেকে। এর পৃষ্ঠাসংখ্যা ১৭৫। পাওয়া যাচ্ছে একুশের বইমেলায় ২৬ নম্বর প্যাভিলিয়নে। রকমারি লিঙ্ক: http://bit.ly/370V18N

লেখকের পরিচয়, বইটির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য এবং অন্যান্য খুঁটিনাটি নিয়ে বিস্তারিত রিভিউটা আছে এখানে: https://roar.media/bangla/main/book-movie/sci-fi-review-o2/

Mozammel Hossain Toha
Mozammel Hossain Toha

জন্মের পর থেকেই লিবিয়ায় আছি। ২০১১ সালের গৃহযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছি একেবারে সামনে থেকে। আর সে কারণেই পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়া সত্ত্বেও আগ্রহ গড়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস এবং রাজনীতিকে ঘিরে।

নিয়মিত লেখালেখি করছি সোশ্যাল মিডিয়ায়। আলোচনা করছি ইউটিউবে। এখন পর্যন্ত তিনটা বই প্রকাশিত হয়েছে: স্পাই স্টোরিজ, স্পাই স্টোরিজ ২ এবং গল্পগুলো সিরিয়ার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *