-
দ্য অ্যাভেঞ্জার: লকারবি বম্বমেকারের সন্ধানে
লকারবি ইনভেস্টিগেশন নিয়ে নিউইয়র্কারের একটা ফ্যাসিনেটিং লংফর্ম আর্টিকেল পড়লাম – The Avenger। এফবিআই যা পারেনি, নিহত এক ব্যক্তির ভাই নিজস্ব অবসেশন থেকে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে কীভাবে তা সম্ভব করে দেখিয়েছে, অর্থাৎ লকারবির বম্ব মেকারকে খুঁজে বের করেছে, সেই কাহিনী। মাইন্ডব্লোয়িং একটা পিস।
লকারবি বম্বিংয়ের ঘটনাটা ১৯৮৮ সালের। সে বছর স্কটল্যান্ডের লকারবি শহরের আকাশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্যান অ্যাম ফ্লাইট ১০৩-এর লাগেজ কম্পার্টমেন্টে রাখা একটি টাইম বোমা বিস্ফোরিত হয়। ফলে ২৫৯ আরোহীর সবাই নিহত হয়, যাদের অধিকাংশই ছিল মার্কিন নাগরিক। এই ঘটনাটাই লকারবি বম্বিং নামে পরিচিত। এবং এটা ছিল তখন পর্যন্ত মার্কিন বেসামরিক নাগরিকদেরকে লক্ষ্য করে সংঘটিত সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলাগুলোর মধ্যে একটা।
-
জাতিসংঘের প্রতিনিধির পদত্যাগ: লিবিয়ার শান্তি কি তবে আরো পেছাল? (প্রথম আলোতে প্রকাশিত)
আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করার পর গত ২ মার্চ, সোমবার বিকেলে হঠাৎ করেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন লিবিয়ায় নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ঘাসান সালামে। তার পদত্যাগের ঘোষণাটি এমন এক সংকটময় মুহূর্তে এলো, যখন ১১ মাস ধরে চলা ত্রিপোলির গৃহযুদ্ধে এক অনিশ্চিত এবং ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি বিরাজ করছিল।
সোমবার বিকেলে নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে আরবিতে টুইট করে সালামে জানান, স্বাস্থ্যগত কারণে তার পক্ষে আর এই চাপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, ফলে তিনি জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। ৬১ বছর বয়সী সালামের পদত্যাগের পেছনে তার শারীরিক সুস্থতা অবশ্যই একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে লিবিয়ার রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষ করলে সন্দেহ হয়, সালামে হয়তো লিবিয়ার পরিস্থিতির উন্নতির কোনো সম্ভাবনা দেখতে না পেয়ে হতাশ হয়েই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
-
মস্কো সিজফায়ার ভেস্তে যাওয়ার পর বিবিসি বাংলার সাথে আমার সাক্ষাৎকার
গত ১৩ই জানুয়ারি রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে লিবিয়ার বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে একটা সিজফায়ার চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু জাতিসংঘ সমর্থিত সরকার জিএনএর প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ আল-সাররাজ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও বিদ্রোহী সেনাবাহিনীর প্রধান খালিফা হাফতার স্বাক্ষর না করেই ফিরে যান। এর ফলে লিবিয়ার ভবিষ্যত পুনরায় অনিশ্চয়তার মুখে পড়ল।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে লিবিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশীদের অবস্থা নিয়ে ১৪ তারিখে বিবিসি বাংলার সাথে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছি। শুনতে পারেন নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে।
-
ড্যানিশ লরেন্স অফ অ্যারাবিয়ার ইসলাম গ্রহণ এবং লিবিয়া ভ্রমণের গল্প
ড্যানিশ পর্যটক এবং সাংবাদিক ক্নুদ হাম্বোকে বলা হয় ড্যানিশ লরেন্স অফ অ্যারাবিয়া। কারণ আসল লরেন্সের মতোই তিনিও ভালো আরবি জানতেন। তাদের দুজনেরই আরবি সংস্কৃতির প্রতি অনুরাগ ছিল, দুজনেই মধ্যপ্রাচ্যের বিশাল এলাকাজুড়ে ভ্রমণ করেছিলেন এবং ইউরোপীয় উপনিবেশবাদের প্রতি শীতল দৃষ্টি নিক্ষেপ করে মধ্যপ্রাচ্যের উপর লেখালেখি করেছিলেন এবং সর্বোপরি দুজনেই ছিলেন আরবদের উপনিবেশবাদ-বিরোধী সংগ্রামের একনিষ্ঠ সমর্থক।
তবে যে জায়গায় ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ এবং গুপ্তচর টি.ই. লরেন্সের চেয়ে ক্নুদ হাম্বো এগিয়ে গিয়েছিলেন, সেটা হচ্ছে তিনি আরব এবং মুসলমানদের প্রতি তার পূর্ববর্তী তাচ্ছিল্যকে অতিক্রম করে পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। এবং ১৯৩০ সালে লিবিয়া ভ্রমণ ওমর আল-মুখতারের সঙ্গী মুজাহেদিনদের সংগ্রামে প্রভাবিত হয়ে তিনি তাদেরকে সাহায্য করতে ব্রতী হয়েছিলেন।
-
লিবিয়া যেভাবে স্বাধীনতা লাভ করেছিল
লিবিয়া ছিল জাতিসংঘের রেজোল্যুশনের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করা প্রথম জাতিরাষ্ট্র। এবং আজকের দিনটা ছিল লিবিয়ার স্বাধীনতা দিবস। ১৯৫১ সালের এই দিনে (২৪ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা লাভ করে “ইউনাইটেড কিংডম অফ লিবিয়া”।
লিবিয়া ছিল ইতালির কলোনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইতালির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সম্মুখভাগে থাকা সেনুসি আন্দোলনের আমির মোহাম্মদ ইদ্রিস ব্রিটিশদের পক্ষে অবস্থান নেন এই আশায় যে, ইতালিয়ানরা পরাজিত হলে লিবিয়া স্বাধীনতা কিংবা পারতপক্ষে স্বায়ত্তশাসন লাভ করবে। কিন্তু বিশ্বযুদ্ধ শেষে ইউরোপিয়ানরা লিবিয়াকে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেওয়ার চেষ্টা করে।
-
বিশ্বের সবচেয়ে হাস্যকর বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা
২০১৬ সালের ২২শে ডিসেম্বর বেশ মজার একটা ঘটনা ঘটে। সেদিন লিবিয়ার সাবহা থেকে ত্রিপোলি যাওয়ার পথে আফ্রিকিয়া এয়ারওয়েজের একটা বিমান ছিনতাই হয়ে যায়।
প্লেনটাতে মোট ১১১ জন যাত্রী এবং ৭ জন ক্রু জন ছিল, যাদের মধ্য ৮২ জন পুরুষ, ২৮ জন নারী এবং ১ জন শিশু। জিম্মিদের মধ্যে লিবিয়ার পার্লামেন্ট এইচওআরের (হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ) একজন সদস্যও ছিলেন।
সাবহা থেকে যাত্রা শুরু করার কিছুক্ষণ পরেই দুইজন ছিনতাইকারী প্লেনটার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। তাদের হাতে ছিল বন্দুক এবং হ্যান্ড গ্রেনেড। তারা প্লেনটাকে মাল্টায় নিয়ে যেতে পাইলটকে বাধ্য করে। মাল্টায় অবতরণের পরপরই তারা প্রথমে নারী এবং শিশুদেরকে এবং পরে সব যাত্রীকে মুক্তি দিয়ে দেয়। ভেতরে থাকে শুধু পাইলট আর ক্রুরা।
-
১৭ই ফেব্রুয়ারির বিপ্লব: গাদ্দাফীর পতনের জানা-অজানা অধ্যায়
২০১১ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি। আরব বসন্তের ধারাবাহিকতায় সেদিন লিবিয়াতেও শুরু হয়েছিল গাদ্দাফীর বিরুদ্ধে আন্দোলন, যার ধারাবাহিকতায় আট মাস পর ঘটেছিল বেয়াল্লিশ ধরে ক্ষমতায় থাকা লৌহ মানব গাদ্দাফির পতন। কিন্তু ঠিক কী কারণে, কীভাবে শুরু হয়েছিল এ বিদ্রোহ? আর ঠিক কীভাবেই পতন হয়েছিল গাদ্দাফীর? সেই ইতিহাসই তুলে ধরলাম এ লেখায়। লেখাটি মানবজমিন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।
-
অ্যান্টি-আমেরিকান নিউজের পরিমাণ বেশি কেন?
পত্রপত্রিকায় বা ইন্টারনেটে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা দেখা যায় আমেরিকার বিরুদ্ধে। এর একটা কারণ তো পরিষ্কার – আমেরিকা আসলেই বিশ্বের নাম্বার ওয়ান কালপ্রিট। তা না হলে তারা তাদের সুপার পাওয়ার মেইন্টেইন করতে পারত না।
কিন্তু আমেরিকা বিরোধিতার এটাই একমাত্র কারণ না। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে, পাবলিক আমেরিকাবিরোধিতা বেশি খায়। সেজন্যই দেখা যায় যারা আসলে আমেরিকাবিরোধী না, বা ইনফ্যাক্ট যারা নিজেরাই আমেরিকার পাপেট, তারাও প্রকাশ্যে প্রচণ্ড আমেরিকাবিরোধী সাজে এবং পাবলিকের মন জয় করার জন্য অন্যদেরকে আমেরিকাপন্থী, বা যেকোনো অপরাধকে আমেরিকার ষড়যন্ত্র হিসেবে দাবি করতে থাকে।
উদাহরণ প্রচুর পাওয়া যাবে। মিসরের উদাহরণটা বিবেচনা করা যায়। প্রেসিডেন্ট মুরসিকে অবৈধভাবে সরিয়ে জেনারেল সিসি ক্ষমতায় বসেছিল আমেরিকার নীরব সমর্থন নিয়েই। না, আমেরিকা মেইন প্লেয়ার ছিল না, কিন্তু তারা ক্যু হবে জেনেও কোনো বাধা দেয়নি।