-
বর্ন এ কিং: রূপালি পর্দায় বাদশাহ ফয়সাল
বর্ন এ কিং (Born a King) (2019) – পুরাই আনএক্সপেক্টেড একটা মুভি। সৌদি বাদশাহ ফয়সাল বিন আব্দুল আব্দুল আজিজের জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের চিত্রায়ন।
সিনেমার কাহিনী ১৯১৯ সালের। সে সময় ব্রিটিশ সরকার আব্দুল আজিজ বিন সৌদকে ব্রিটেন সফরের নিমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু আব্দুল আজিজ তখন শেরিফ হুসেইনের সাথে যুদ্ধের আশঙ্কায় দেশ ত্যাগ করার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না। তার পরিবর্তে তিনি ইংল্যান্ডে পাঠান তার ছেলে, ভবিষ্যত বাদশাহ ফয়সালকে। সে সময় ফয়সালের বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর!
-
লা মিজারেবলস: ফ্রান্স কাঁপানো রায়টের সত্য ঘটনা নিয়ে যে মুভি
চমৎকার একটা ফ্রেঞ্চ মুভি লা মিজারেবলস (Les Misérables)। লুজলি বেজড অন এ ট্রু স্টোরি। এবং স্টোরিটা ঘটেছিল পরিচালকের নিজের জীবনেই!
মালিয়ান বংশোদ্ভূত পরিচালক লাজ লি ছিলেন ফ্রান্সের দরিদ্র এলাকার এক রাবিশ কালেক্টরের ছেলে। ছোটকাল থেকেই কৃষ্ণাঙ্গ গরীবদের উপর ফ্রান্সের শ্বেতাঙ্গ পুলিশের নির্যাতন দেখে বড় হয়েছেন তিনি। একটু বড় হওয়ার পর যখন হাতে একটি হ্যান্ডহেল্ড ভিডিও ক্যামেরা পান, তখন থেকে সেটা দিয়ে পুলিশি নির্যাতনের ভিডিও করতে শুরু করেন তিনি।
-
অসাধারণ কিছু নন-লিনিয়ার টাইমলাইনের মুভি
নন-লিনিয়ার টাইমলাইন হলো যেখানে সিনেমার কাহিনী সরল গতিতে এগোয় না। অথবা বলা যায়, যেখানে সিনেমার দৃশ্য পরম্পরা বাস্তবের ঘটনার পরম্পরা অনুসরণ করে না। আগের ঘটনা পরে, পরের ঘটনা আগে – এভাবে দেখানো মিলিয়ে-মিশিয়ে দেখানো হয়।
এ ধরনের মুভির সবচেয়ে বড় উপকারিতা হল, এতে কাহিনী এমন জটিলভাবে সাজানো যায় যে পুরো মুভি জুড়ে শেষের ঘটনাগুলো সম্পর্কে কিছু কিছু আভাস দিয়ে আকর্ষণও তৈরি করা যায়, আবার মূল রহস্যটা একেবারে শেষ দৃশ্যে এসেও উন্মোচিত করা যায়। ফলে পুরো সিনেমা জুড়েই সিনেমাটা দর্শকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে পারে।
ক্রিস্টোফার নোলানের ফিল্মগুলো এর একটা ভালো উদাহরণ। আমার দেখা সেরা কিছু নন লিনিয়ার স্ট্রাকচারে তৈরি মুভির কথা এখানে আলোচনা করলাম:
-
হোটেল মুম্বাই: তাজ হোটেলে অবরুদ্ধ ১২ ঘণ্টা
গত বছর দেখেছিলাম হোটেল মুম্বাই (Hotel Mumbai) (2018)। ২০০৮ সালের মুম্বাই সিরিজ অ্যাটাকের উপর নির্মিত অস্ট্রেলিয়ান মুভি।
ভারতের মুম্বাইয়ে পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্করে তৈয়বার ঐ সিরিজ আক্রমণে মোট ১৬৬জন নিহত হয়েছিল। মোট ১২টি কোর্ডিনেটেড অ্যাটাক হয়েছিল। এর মধ্যে মুভিতে শুধু মুম্বাইর তাজ হোটেলের আক্রমণটার উপরেই ফোকাস করা হয়েছে।
-
ম্যারি কোলভিনের প্রাইভেট ওয়ার
নিচের ছবি গাদ্দাফির সাথে ম্যারি কোলভিনের যে দৃশ্যটা দেখা যাচ্ছে, সেটা বাস্তবের না, A Private War সিনেমার। এবং এখানে যে গাদ্দাফিকে দেখা যাচ্ছে, তিনিও আসল গাদ্দাফি নন; সিনেমার অভিনেতা। তবে বাস্তবেও সানডে টাইমসের সাংবাদিক ম্যারি কোলভিন গাদ্দাফির সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। একবার না, একাধিক বার।
১৯৮৬ সালে রিগ্যান প্রশাসন যখন লিবীয় নেতা মোয়াম্মার আল-গাদ্দাফিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বাসভবনের উপর বিমান হামলা (অপারেশন এল-ডোরাডো ক্যানিয়ন) পরিচালনা করে, তখন ম্যারি কোলভিনই ছিলেন প্রথম সাংবাদিক, যিনি গাদ্দাফির সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন।
-
অল দ্য প্রেসিডেন্টস মেন: ওয়াটারগেট ক্যালেঙ্কারির তদন্ত নিয়ে যে মুভি
পলিটিক্যাল থ্রিলার মুভিগুলো আমার দারুণ পছন্দের। আর সেটা যদি সত্য কাহিনী অবলম্বনে হয়, তা হলে তো কথাই নেই। অল দ্যা প্রেসিডেন্টস মেন (All The President’s Men) সেরকমই একটা মুভি, যার কাহিনী আবর্তিত হয়েছে ওয়াটারগেট ক্যালেঙ্কারির তদন্তকে ঘিরে।
দুই দুঃসাহসী সাংবাদিক কী অসাধারণ দক্ষতা এবং সাহসিকতার সাথে ওয়াটারগেট ক্যালেঙ্কারির পেছনের ঘটনা উন্মোচন করে শেষপর্যন্ত আমেরিকার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোন প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে, সেই কাহিনীর সফল চিত্রায়ন এই মুভিটি। বলা যায় এই ক্যাটাগরির এটাই সেরা মুভি।
-
দ্য (টর্চার) রিপোর্ট: যে রিপোর্টে আছে সিআইএর বন্দী নির্যাতনের কাহিনী
এই লেখাটি একই শিরোনামে আরো বিস্তারিত আকারে প্রকাশিত হয়েছে Roar বাংলায়। সেখান থেকে মূল লেখাটি পড়তে পারেন এই লিঙ্ক থেকে।
আবু জুবায়দা ছিল আল-কায়েদার মাঝারি পর্যায়ের একজন নেতা। ৯/১১ এর সন্ত্রাসী হামলার কয়েক মাস পর, ২০০২ সালের ২৮ মার্চ পাকিস্তানের ফয়সালাবাদের আল-কায়েদার এক সেফ হাউজে যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, সিআইএ এবং এফবিআই।
গ্রেপ্তারের সময় আবু জুবায়দা গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু তাকে চিনতে পেরে সিআইএ এবং এফবিআই তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করে। মোটামুটি সুস্থ হওয়ার পর সিআইএ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। কিন্তু তার আগেই, হাসপাতালের বিছানায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন পরবর্তীতে এফবিআই থেকে পদত্যাগ করা স্পেশাল এজেন্ট আলি সুফান।
-
ক্যাথারিন গান: যে স্পাই ইরাক যুদ্ধ থামিয়ে দিতে চেয়েছিল
হুইসেল ব্লোয়ারদের কথা উঠলেই আমাদের মনে পড়ে এডওয়ার্ড স্নোডেন কিংবা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের কথা, কিংবা বড়জোর পেন্টাগন পেপার্সের ড্যানিয়েল এলসবার্গের কথা। সন্দেহ নেই, তাদের প্রত্যেকের কাজই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু তারা মার্কিন সরকারের টপ সিক্রেট তথ্যগুলো প্রকাশ করেছেন বা করতে পেরেছেন সময়ের অনেক পরে।
সেই তুলনায় ক্যাথারিন গান এক ব্যতিক্রমী হুইসেল ব্লোয়ার। ২০০৩ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি যখন জানতে পারেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য মিলে অন্যায়ভাবে ইরাক আক্রমণের জন্য জাতিসংঘের ভোট জালিয়তি করতে যাচ্ছে, তখন তিনি সময়ের অনেক আগেই সেটা ফাঁস করে দিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন সময় থাকতেই অন্যায় একটা যুদ্ধ থামিয়ে দিতে। বলাই বাহুল্য, তিনি ব্যর্থ হয়েছেন, কিন্তু সন্দেহ নেই তিনি বিশ্বের সামনে উদাহরণ সৃষ্টি করে গেছেন।