-
বর্ন এ কিং: রূপালি পর্দায় বাদশাহ ফয়সাল
বর্ন এ কিং (Born a King) (2019) – পুরাই আনএক্সপেক্টেড একটা মুভি। সৌদি বাদশাহ ফয়সাল বিন আব্দুল আব্দুল আজিজের জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের চিত্রায়ন।
সিনেমার কাহিনী ১৯১৯ সালের। সে সময় ব্রিটিশ সরকার আব্দুল আজিজ বিন সৌদকে ব্রিটেন সফরের নিমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু আব্দুল আজিজ তখন শেরিফ হুসেইনের সাথে যুদ্ধের আশঙ্কায় দেশ ত্যাগ করার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না। তার পরিবর্তে তিনি ইংল্যান্ডে পাঠান তার ছেলে, ভবিষ্যত বাদশাহ ফয়সালকে। সে সময় বাদশাহ ফয়সাল ছিলেন মাত্র ১৪ বছর বয়সী!
-
মিউনিখ ম্যাসাকার: অপারেশন ইক্রিত ওয়া বিরাম
১৯৭২ সালের আজকের এই দিনে (৫ সেপ্টেম্বর) সংঘটিত হয়েছিল অপারেশন “ইক্রিত ওয়া বিরাম”। নামটি এসেছে ফিলিস্তিনের দুটি খ্রিস্টান-প্রধান গ্রাম “ইক্রিত” এবং “বিরাম” থেকে, যাদের অধিবাসীদেরকে জায়নিস্টরা ১৯৪৮ সালে উচ্ছেদ করেছিল।
অপারেশনের অধীনে “ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর” নামে একটি ফিলিস্তিনি গেরিলা সংগঠন জার্মানির মিউনিখের অলিম্পিক ভিলেজে ঢুকে পড়ে এবং ১১ জন ইসরায়েলি খেলোয়াড় ও কোচকে জিম্মি করে।
তাদের মুক্তিপণ হিসেবে তারা ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী ২৩৪ জন ফিলিস্তিনির এবং জার্মানির কারাগারে বন্দী বামপন্থী গেরিলা সংগঠন “রেড আর্মি ফ্যাকশন” তথা “বাদর-মেইনহফ” এর বন্দীদের মুক্তির দাবি জানায়।
কিন্তু ইসরায়েল আলোচনায় বসতে রাজি না হওয়ায় এবং জার্মানির পুলিশের অদক্ষতায় জিম্মি নাটক শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষে রূপ নেয়। বন্দী ১১ জন ইসরায়েলির সবাই, এক জার্মান পুলিশ অফিসার এবং ৫ জন ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর সদস্য নিহত হয়।
তাদের বাকি তিন জন সদস্য গ্রেপ্তার হয়, কিন্তু পরবর্তীতে ব্ল্যাক সেপ্টেম্বরের প্রতিশোধের ভয়ে জার্মানি তাদেরকে মুক্তি দেয়। লিবিয়া তাদেরকে বীরের বেশে বিপুল সংবর্ধনা দিয়ে এয়ারপোর্টে স্বাগত জানায়।
মিউনিখে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি প্রচলিতভাবে মিউনিখ ম্যাসাকার নামে পরিচিত।
-
প্রিন্সেস সারভাত: যে বাঙালি নারী হতে যাচ্ছিলেন জর্ডানের রানি!
তার নাম প্রিন্সেস সারভাত (সারওয়াত) একরামউল্লাহ। জন্ম কলকাতায়। তার বাবা ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম পররাষ্ট্র সচিব, আর মা ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম দুই নারী এমপির একজন।
কিন্তু তার আরও দুটি পরিচয়ও আছে। তিনি হচ্ছেন পাকিস্তানের এককালের প্রধানমন্ত্রী, এবং আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দীর ভাগ্নি। তার মা ছিলেন সোহরাওয়ার্দীর মামাতো বোন। একইসাথে তিনি বাংলাদেশী অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহানের শ্যালিকা। এবং এই সারভাতেরই হওয়ার কথা ছিল জর্ডানের রানি!
-
হাশেমী রাজবংশ: উত্থান এবং বিস্তার
বর্তমান যে আরব বিশ্ব, তার প্রতিষ্ঠার মূলে আছে দুটি রাজবংশ – সৌদ রাজবংশ এবং হাশেমী রাজবংশ।
সৌদ রাজবংশ সম্পর্কে তো সবাই জানে, কিন্তু সৌদরা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় হাশেমী রাজবংশ ছিল সৌদদের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান “সৌদি আরব” তো বটেই, সিরিয়া, থেকে ইয়েমেন পর্যন্ত সমগ্র আরব ভূমিই তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা ছিল।
-
সালিমা মুকাওওয়াস: দ্য গডেস অফ আফ্রিকান ওয়ার
ভদ্রমহিলার নাম সালিমা বিনতে মুকাওওয়াস (লিবিয়ান অ্যাকসেন্টে সিলিমা এমগাওয়্যেস)। ঔপনিবেশিক ইতালির বিরুদ্ধে লিবিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামের এক কিংবদন্তী নারী যোদ্ধা তিনি।
মুকাওওয়াস সম্পর্কে যেসব তথ্য জানা যায়, সেগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। তার যুদ্ধে অংশগ্রহণ সম্পর্কে জানা যায় বিদেশী পর্যটক এবং সাংবাদিকদের লেখনী থেকে। অন্যদিকে তার প্রাথমিক জীবন সম্পর্কে জানা যায় লিবিয়ান বিভিন্ন পত্রিকা এবং ব্লগ থেকে।
-
লিবিয়া যেভাবে স্বাধীনতা লাভ করেছিল
লিবিয়া ছিল জাতিসংঘের রেজোল্যুশনের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করা প্রথম জাতিরাষ্ট্র। এবং আজকের দিনটা ছিল লিবিয়ার স্বাধীনতা দিবস। ১৯৫১ সালের এই দিনে (২৪ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা লাভ করে “ইউনাইটেড কিংডম অফ লিবিয়া”।
লিবিয়া ছিল ইতালির কলোনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইতালির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সম্মুখভাগে থাকা সেনুসি আন্দোলনের আমির মোহাম্মদ ইদ্রিস ব্রিটিশদের পক্ষে অবস্থান নেন এই আশায় যে, ইতালিয়ানরা পরাজিত হলে লিবিয়া স্বাধীনতা কিংবা পারতপক্ষে স্বায়ত্তশাসন লাভ করবে। কিন্তু বিশ্বযুদ্ধ শেষে ইউরোপিয়ানরা লিবিয়াকে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেওয়ার চেষ্টা করে।
-
কর্দোভার খ্রিস্টান শহিদরা: ডঃ ইয়াসির ক্বাদি
বিখ্যাত ইসলামিক স্কলার ডঃ ইয়াসির ক্বাদি আজকে অদ্ভুত এবং চমৎকার একটা বিষয় নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছেন – “ক্রিশ্চিয়ান মার্টায়ার্স অফ কর্দোভা”। এই লেখাটা তারই অনুবাদ।
৮৫০ সাল থেকে শুরু করে পরবর্তী কয়েকশো বছর পর্যন্ত আন্দালুসে এক অদ্ভুত ব্যাপার ঘটছিল। খ্রিস্ট ধর্মগুরুদের অনেকে সে সময় শহরের কেন্দ্রে অথবা মসজিদের সামনে গিয়ে উপস্থিত হতো, এরপর আল্লাহ্কে বা মুহাম্মাদ (সা)-কে প্রকাশ্যে জঘন্য ভাষায় গালাগালি করত।
তারা জানত এই ধরনের গালাগালির শাস্তি কারাগার অথবা মৃত্যুদণ্ড, কিন্তু তারপরেও তারা এই কাজ করত। ধারণা করা হয় সে সময় এরকম কাজের জন্য প্রায় ৫০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, বা তাদের ভাষায় এরকম ৫০ জন খ্রিস্টান ধর্মগুরু “শহিদ” হয়েছিল। প্রশ্ন হচ্ছে কেন এমনিতে যারা সমাজের সবচেয়ে জ্ঞানী এবং সম্মানিত (তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে) হিসেবে বিবেচিত, কেন তারা এরকম অদ্ভুত আচরণ করত?
-
পার্মানেন্ট রেকর্ড: এডওয়ার্ড স্নোডেনের আত্মজীবনী
এডওয়ার্ড স্নোডেনকে কি পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু আছে? মনে হয় না। এডওয়ার্ড স্নোডেন-অ্যাসাঞ্জরা হচ্ছে এই সময়ের বিপ্লবী গেরিলা, অস্ত্রের পরিবর্তে প্রযুক্তিই যাদের শেষ ভরসা।
পার্মানেন্ট রেকর্ড (Permanent Record) বইটা এডওয়ার্ড স্নোডেনের আত্মজীবনী। মিডিয়াতে আমরা স্নোডেনের ফাঁস করা তথ্যগুলো সম্পর্কেই বেশি আলোচনা শুনি, সেই তুলনায় ব্যক্তি স্নোডেন সম্পর্কে খুব বেশি আলোচনা শুনি না। যেটুকু শুনি, “লো লেভেল টেক কন্ট্রাক্টর টার্নড হ্যাকার”, সেটুকুও মার্কিন সরকারি ভাষ্য দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত। এই বইটা স্নোডেন সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের সেই ঘাটতিটুকুই পূরণ করবে।
বইটাতে স্নোডেনের ফাঁস করা মার্কিন গোয়েন্দাসংস্থাগুলোর গোপন তথ্য সম্পর্কে, কিংবা মার্কিন প্রশাসনের গোপন কার্যক্রম সম্পর্কে নতুন এমন কোনো চাঞ্চল্যকর তথ্য নেই, যা আমরা জানি না। বইটার ফোকাস মূলত স্নোডেনের নিজের জীবন। ছোটকাল থেকে ইন্টেলিজেন্স কমিউনিটি পরিবারে তার বেড়ে ওঠা, অসাধারণ মেধাবী হিসেবে অল্প বয়সেই দক্ষ হ্যাকার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা, কিশোর বয়সেই নিউক্লিয়ার ফ্যাসিলিটির সার্ভার হ্যাক করে তাদের কাছ থেকে চাকরির অফার পাওয়া – প্রতিটা অধ্যায়েই স্থান পেয়েছে তার জীবনের এরকম ইন্টারেস্টিং ঘটনাগুলো, যেগুলো এতদিন আমাদের কাছে অজানা ছিল।