ইরাকের কুয়েত দখল এবং তার ফলাফল

আগস্টের ২ তারিখে কুয়েত দখল করে নেওয়ার পর ১৯৯০ সালের এই দিনে (২৮ আগস্ট) ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ঘোষণা দেন, কুয়েত হচ্ছে ইরাকের ১৯তম প্রদেশ।

কুয়েত দখলের পূর্বে সাদ্দামের সাথে আমেরিকার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সাদ্দাম এমনকি কুয়েত দখলের পরিকল্পনা মার্কিন রাষ্ট্রদূতকেও জানিয়েছিলেন। রাষ্ট্রদূত মন্তব্য করেছিলেন, এটা ইরাকের নিজস্ব ব্যাপার। আমেরিকার এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য নেই।

তার এই বক্তব্যকেই গ্রিন সিগন্যাল হিসেবে ধরে নিয়ে সাদ্দাম কুয়েত দখল করে বসেন। আর সাথে সাথে আমেরিকা তার অবস্থান পাল্টে ফেলে। সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর সাথে মিলে তারা শুরু করে উপসাগরীয় যুদ্ধ।

এই যুদ্ধে ইরাকি সেনাবাহিনী প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়। ইচ্ছাকৃতভাবে বিমান হামলা করে ইরাকের সিভিলিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ধ্বংস করে দেওয়া হয়। যুদ্ধে সরাসরি নিহত হয় অন্তত ২৫ থেকে ৫০ হাজার ইরাকি। কিন্তু যুদ্ধের পরবর্তী দিনগুলোতে অবরোধের কারণে, পুষ্টিহীনতায়, চিকিৎসার অভাবে মারা যায় লক্ষ লক্ষ ইরাকি।

সাদ্দামের কুয়েত দখলের কারণেই সৌদি আরব মার্কিন সেনাদেরকে নিজেদের দেশে আমন্ত্রণ জানায়। আর আরবের পবিত্র ভূমিতে মার্কিন সেনাদের এই উপস্থিতির প্রতিক্রিয়াই পরবর্তী দিনগুলোতে ওসামা বিন লাদেন এবং আল-কায়েদার উত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কুয়েত দখলের মাধ্যমে সাদ্দাম এবং সেই দখলে সম্মতি দিয়ে, পরে পাল্টা অবস্থান নিয়ে আমেরিকা যে অন্যায় করেছিল, সেই অন্যায়ের খেসারত আজও দিয়ে যাচ্ছে ইরাক এবং আরব বিশ্বের সাধারণ জনগণ।

আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে আমার সবগুলো লেখা পাবেন এই লিঙ্কে। আর রেগুলার আপডেট পেতে চাইলে মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস ও রাজনীতি পেজটিতে লাইক দিয়ে সাথে থাকুন।

Mozammel Hossain Toha
Mozammel Hossain Toha

জন্মের পর থেকেই লিবিয়ায় আছি। ২০১১ সালের গৃহযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছি একেবারে সামনে থেকে। আর সে কারণেই পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়া সত্ত্বেও আগ্রহ গড়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস এবং রাজনীতিকে ঘিরে।

নিয়মিত লেখালেখি করছি সোশ্যাল মিডিয়ায়। আলোচনা করছি ইউটিউবে। এখন পর্যন্ত তিনটা বই প্রকাশিত হয়েছে: স্পাই স্টোরিজ, স্পাই স্টোরিজ ২ এবং গল্পগুলো সিরিয়ার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *