-
যেভাবে একজন স্বৈরাচরী হবেন: নেটফ্লিক্সের ডকু সিরিজ
দেখলাম নেটফ্লিক্সের ডকুমেন্টারি মিনি-সিরিজ, How to Become a Tyrant (2021)। যদিও কিছু ক্ষেত্রে বায়াসড এবং ওভার সিমপ্লিফিকেশনের দোষে দুষ্ট, তারপরেও ওভার অল দুর্দান্ত একটা ডকুমেন্টারি। অতি অবশ্যই মাস্ট-ওয়াচ।
আপনার আশেপাশের নতুন নতুন স্বৈরশাসকদের দিকে তাকালে আপনি প্রায়ই দেখবেন, তাদের মধ্যে ক্লাসিকাল স্বৈরশাসকদের অনেক বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। একদিকে তারা কবিতা লিখতে পছন্দ করে, ফুল ভালোবাসে, শিশুদেরকে আদর করে, জনগণের চিন্তায় তাদের রাতে ঘুম আসে না।
অন্যদিকে তারা নিজেদের নামে দেশের সবকিছুর নামকরণ করে, নির্লজ্জভাবে দেশের ইতিহাস বিকৃত করে, গুম-খুনের রাজত্ব কায়েম করে, কৃত্রিম শত্রু তৈরি করে দেশের সব সমস্যার জন্য তাদেরকে দায়ী করে, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, দেশের ভেতরে সঙ্কট বেড়ে গেলে কৃত্রিমভাবে নতুন সঙ্কট করে জনগণের দৃষ্টি সেদিকে ফেরানোর চেষ্টা করে।
-
ফিলিস্তিনের গল্প: দ্য স্টোরি অফ দ্য ল্যান্ড
মূল: সারাহ আলি, ভাষান্তর: মোজাম্মেল হোসেন ত্বোহা
আমি তার অশ্রুসিক্ত চোখের দিকে তাকালাম, এবং সেখানে সুখের মতো কিছু একটার দেখা পেয়ে আমি হাসলাম। যে মানুষটাকে আমি সব সময় বাবা হিসেবে জেনে এসেছি, আজ তিনি ফিরে এসেছেন।
আজ তাকে আর সেই অপরিচিত লোকটার মতো দেখাচ্ছে না, যাকে গত তিন বছর ধরে আমি পুরোপুরি চিনতে পারিনি। তাকে আর সেই ভুলোমনের স্থির মূর্তির মতো মনে হচ্ছে না, যিনি সব সময় দেয়ালের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেন এবং বাড়ির কেউ যখন তাকে সম্বোধন করত, তখন অনাগ্রহের সাথে মাথা ঘুরিয়ে তাকাতেন।
তিনি এখন এখানেই আছেন। তিনি এখানেই উপস্থিত আছেন। এবং আমি যখন আমার ভালো ফলাফল নিয়ে বড়াই করতে লাগলাম, তখন তিনি সত্যি সত্যিই সেটা শুনতে লাগলেন।
-
ঊনলৌকিক: অসাধারণ একটা অতিপ্রাকৃতিক অ্যান্থলজি ওয়েবসিরিজ
মহানগর না, এই মুহূর্তে আমার সবচেয়ে ফেভারিট বাংলা অ্যান্থলজি ওয়েব সিরিজ “ঊনলৌকিক“।
“চরকি” অ্যাপে রিলিজ হওয়া সিরিজটা সুপারন্যাচারাল ঘরানার। পাঁচটা এপিসোড। প্রতিটার কাহিনী ভিন্ন ভিন্ন – যেটাকে অ্যান্থলজি বলে। এপিসোডগুলো মাত্র ২৩ মিনিট করে। প্রতিটাই সুন্দর, তবে তৃতীয় এবং পঞ্চম এপিসোড দুটো একটু বেশিই ভালো লেগেছে।
গল্পগুলো চমৎকার। রচনায় শিবব্রত বর্মন। প্রথম এপিসোড “মরিবার হলো তার স্বাদ”-এর কাহিনী নেওয়া হয়েছে প্রথম আলোতে প্রকাশিত একই নামের তার একটি ছোট গল্প থেকে। এছাড়া “মিসেস প্রহেলিকা” এবং “দ্বিখণ্ডিত” এপিসোড দুটির কাহিনী নেওয়া হয়েছে তার “বানিয়ালুলু” নামের বই থেকে।
-
ডার্ক ওয়াটার্স: কর্পোরেট বিষের বিরুদ্ধে লড়াই
বই অবলম্বনে মুভি তো সেই প্রাচীন কাল থেকেই নির্মিত হয়ে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে লং রিড আর্টিকেল অবলম্বনেও বেশ কিছু চমৎকার মুভি নির্মাণের ট্রেন্ড শুরু হয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমস ম্যাগাজিনের লং রিড আর্টিকেল “The Lawyer Who Became DuPont’s Worst Nightmare” অবলম্বনে তৈরি Dark Waters (2019) মুভিটা সেরকমই একটা মুভি। জঁনরা লিগ্যাল থ্রিলার। এবং অফকোর্স বেজড অন ট্রু স্টোরি।
-
মা হাওয়া কবরস্থান: যার নামানুসারে জেদ্দা শহরের নামকরণ
সৌদি আরবের জেদ্দা শহরের নামটি এসেছে জিদ্দাহ শব্দটি থেকে। আরবি জিদ্দাহ শব্দটির অর্থ দাদী। ধারণা করা হয়, মানবজাতির আদি মাতা (অথবা মানবজাতির দাদী) হযরত হাওয়া (আ)-এর আবাসভূমি ছিল এই জেদ্দা নগরী। অনেকের ধারণা, সেখান থেকেই শহরটির এই নামটি এসেছে।
যদিও কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ নেই, কিন্তু স্থানীয় প্রাচীন লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, জেদ্দার বর্তমান আল-বালাদ এলাকার “মাক্ববারাত উম্মুনা হাওয়া” তথা “আমাদের মা হাওয়া” নামক কবরস্থানেই শায়িত আছেন হযরত হাওয়া। ইবনে বতুতাসহ বহু পর্যটক এবং ইতিহাসবিদের বর্ণনায় জেদ্দায় হযরত হাওয়ার কবরের উপস্থিতি এবং সেটা নিয়ে মানুষের আগ্রহের কথা জানা যায়।
-
পোস্ট জার্নালিজম: চমস্কির প্রপাগান্ডা মডেলের আধুনিক রূপ
মিডিয়া কীভাবে ক্ষমতাসীনদের স্বার্থে গণমানুষের সম্মতি উৎপাদন করে, সে বিষয়ে ১৯৮৮ সালে নোয়াম চমস্কি যখন তার ম্যানুফ্যাকচারিং কনসেন্ট বইটা লিখেছিলেন, তখনকার মিডিয়ার সাথে এখনকার মিডিয়ার পার্থক্য আকাশ-পাতাল। কাজেই প্রশ্ন আসতে পারে, চমস্কির সেই তত্ত্ব কী আজও প্রযোজ্য?
যে পাঁচটা পয়েন্টের উপর ভিত্তি করে চমস্কি এবং তার সহ-লেখক হারম্যান তাদের “প্রপাগান্ডা মডেল” দাঁড় করেছিলেন, তার প্রথম দুইটিই ছিল গণমাধ্যমের মালিকানা এবং বিজ্ঞাপন। মালিকানার কথা থাক, আপাতত বিজ্ঞাপন নিয়েই আলোচনা করি, যেহেতু গত কয়েক দশকে সংবাদপত্র টিকেই ছিল মূলত বিজ্ঞাপনের উপর।
-
দেশত্যাগে মরিয়া আফগানরা: তালেবানভীতি, নাকি সুবিধাবাদিতা?
নো ডিয়ার মিডিয়া অ্যান্ড সেক্যুলার ভাই-বেরাদার, আফগানিস্তান ছাড়ার জন্য এয়ারপোর্টে ভিড় জমানো মরিয়া মানুষেরা “আফগান জনগণ” না। ওরা আফগান জনগণের খুবই খুবই খুবই ক্ষুদ্র একটা অংশ। এর চেয়ে অনেক অনেক বেশি মানুষ রাস্তায় নেমে তালেবানকে স্বাগত জানাচ্ছে।
মূল আফগান জনগণ তারাই, যারা তালেবানকে কতটুকু সমর্থন করে সেটা পরে বোঝা যাবে, কিন্তু তারা অ্যাটলিস্ট আমেরিকা এবং তার পাপেট কাবুল গভর্নমেন্টের চেয়ে তালেবানের টেকওভারকে প্রেফার করে। এবং পুরো দেশজুড়ে অন্য কোথাও তারা এরকম উদ্বিগ্ন হয়ে পালানোর চেষ্টা করেনি, মরিয়া হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেনি বলেই তালেবানের পক্ষে বিনাযুদ্ধে, শান্তিপূর্ণভাবে মাত্র এক সপ্তায় পুরো দেশ জয় করা সম্ভব হয়েছে।
-
স্পাই স্টোরি: যে হানি ট্র্যাপ অপারেশন পাল্টে দিয়েছিল বিশ্বযুদ্ধের গতি!
১৯৪২ সাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়। সমরাঙ্গনের পাশাপাশি সমান তালে যুদ্ধ চলছে কূটনৈতিক অঙ্গনে, এসপিওনাজ জগতে, এমনকি বিনোদন জগতেও। মরক্কোর ক্যাসাব্লাঙ্কা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ক্ষমতাসীন ফরাসি কর্তৃপক্ষ এবং নাৎসি বাহিনীর মধ্যকার উত্তেজনার পটভূমিতে গড়ে ওঠা প্রেমকাহিনী নিয়ে হলিউড নির্মাণ করছে “ক্যাসাব্লাঙ্কা” নামক চলচ্চিত্র।
জুনের ২১ তারিখে, অভিনেতা হামফ্রে বোগার্ট এবং অভিনেত্রী ইনগ্রিড বার্গম্যান যখন হলিউডের ক্যালিফোর্নিয়া স্টুডিওতে ক্যাসাব্লাঙ্কা শহরের সেটিংয়ে শুটিং নিয়ে ব্যস্ত, ঠিক সে সময় ওয়াশিংটনের নাৎসি জার্মানি কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত ভিশি-ফ্রেঞ্চ সরকারের দূতাবাসের ভেতরে গোপন এক হানি ট্র্যাপ অপারেশন পরিচালনা করছিলেন ব্রিটিশ-আমেরিকান স্পাই, বেটি প্যাক। আর তার অপারেশনের লক্ষ্য ছিল আসল ক্যাসাব্লাঙ্কা শহর জয় করা!