-
পেট্রোডলারের দিন শেষ? পেট্রো-ইউয়ানের রাজত্ব শুরু?
খুবই ইন্টারেস্টিং একটা ঘটনা ঘটেছে গত সপ্তায় – সৌদি আরব বলেছে, তারা চীনের কাছে তাদের তেলের একটা অংশ ইউএস ডলারে তথা পেট্রোডলার-এ বিক্রি না করে বরং চাইনিজ মুদ্রা ইউয়ানে বিক্রির চিন্তাভাবনা করছে।
নিউজটা খুবই ইন্টারেস্টিং। কারণ একদিকে কয়েক বছর ধরেই সৌদি আরবের সাথে আমেরিকার সম্পর্ক খারাপ যাচ্ছে, অন্য দিকে চীনের সাথে তাদের সম্পর্ক দৃঢ় হচ্ছে। ওদিকে চীন আবার আমেরিকাকে টেক্কা দিয়ে বিশ্বের নতুন অর্থনৈতিক সুপার পাওয়ার হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে।
এরকম পরিস্থিতিতে সৌদি আরব যদি আসলেই এরকম কোনো সিদ্ধান্ত নেয় – পেট্রোডলার থেকে বেরিয়ে এসে পেট্রোইউয়ানের দিকে ঝুঁকে পড়ে, তাহলে ডলারের ভবিষ্যতটা কী হবে? এটাই কি হবে ইউএস ডলারের ‘দ্য বিগিনিং অফ দ্য এন্ড’? এর মাধ্যমেই কি পেট্রোডলার এবং সেই সাথে বিশ্বের উপর মার্কিন আধিপত্যের অবসান ঘটবে?
নাকি এটা জাস্ট সৌদি আরবের একটা ব্লাফ? আমেরিকার উপর চাপ সৃষ্টি করার একটা প্রচেষ্টা? যদি সেটাই হয়ে থাকে, তাহলে এর মধ্য দিয়ে সৌদি আরব আসলে কী অর্জন করতে চাইছে?
এই ব্যাপারগুলো নিয়েই আজকের আর্টিকেল। তবে স্বাভাবিকভাবেই এটা শুধুমাত্র অর্থনীতি বিষয়ক আলোচনা হবে না। এর সাথে প্রাসঙ্গিকভাবেই উঠে আসবে ইতিহাস এবং রাজনীতি – পেট্রোডলারের ইতিহাস, সৌদি-আমেরিকা সম্পর্ক, সৌদি-ইরান দ্বন্দ্ব ইত্যাদি।
বিস্তারিত দেখুন ইউটিউব ভিডিওতে:
-
CIA যেভাবে বাদশাহ হোসেন এর বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ভেস্তে দিয়েছিল
১৯৫৮ সালের ঘটনা। ওয়াশিংটনের মিসরীয় দূতাবাসে আড়ি পাততে গিয়ে সিআইএ জানতে পারে, মিসরের উদ্যোগে উচ্চপদস্থ কিছু জর্ডানীয় সেনা অফিসার জর্ডানের বাদশাহ হুসেইনকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে।
মিসরের ক্ষমতায় তখন প্রেসিডেন্ট গামাল আবদেল নাসের। তার আমেরিকা এবং ইসরায়েল-বিরোধী বিপ্লবী জাতীয়তাবাদী অবস্থান সমগ্র আরব বিশ্বে ঢেউ তুলেছে। অন্যদিকে জর্ডানের ক্ষমতায় হাশেমী রাজবংশের ২২ বছর বয়সী তরুণ বাদশাহ – হুসেইন বিন আব্দুল্লাহ।
বলা হয়ে থাকে, হাশেমীরা রাসুল (সা) এর বংশধর। কিন্তু বাস্তবে কয়েক পুরুষ ধরেই তারা ছিল ব্রিটিশ এবং আমেরিকানদের ঘনিষ্ঠ মিত্র। কাজেই সিআইএ সিদ্ধান্ত নেয় – যেকোনো মূল্যে নাসেরপন্থী সম্ভাব্য অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে বাদশাহ হুসেইনের ক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে।
আম্মান স্টেশন চীফের দায়িত্ব নিয়ে তারা জর্ডানে প্রেরণ করে নতুন একজন সিআইএ অফিসারকে। তার নাম – জ্যাক ও কনেল। তার মিশন – অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত সবাইকে খুঁজে বের করা এবং তাদেরকে নিষ্ক্রিয় করে বাদশাহ হুসেইনকে রক্ষা করা।
ভিডিও দেখুন ইউটিউব চ্যানেলে।
-
যে বোকামিতে ধরা পড়তে বসেছিল সিআইএর সেরা অফিসার!
পঞ্চাশের দশকের শুরুর দিকের ঘটনা। সিআইএ তাদের ইন্টালিজেন্স অফিসার জ্যাক ও’কনেলকে ডীপ আন্ডারকভার এজেন্ট হিসেবে মিসরে প্রেরণ করেছে।
ও’কনেল যখন মিসরের কায়রো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে এসে পৌঁছেন, তখন গভীর রাত। এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে তিনি কায়রোর একটি হোটেলে গিয়ে ওঠেন।
রিজার্ভেশন চেক করার জন্য হোটেলের ক্লার্কের দিকে যখন তিনি তার পাসপোর্ট এগিয়ে দেন, তখন তাকে হতভম্ব করে দিয়ে ক্লার্ক জিজ্ঞেস করে, did you come from CIA? অর্থাৎ, “আপনি কি CIA থেকে এসেছেন?”
ক্লার্কের প্রশ্ন শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন ও কনেল – তার পরিচয় কি তাহলে ফাঁস হয়ে গেছে?
(more…)犀利士 > -
আসগর ফরহাদির এ হিরো
দেখলাম ইরানি পরিচালক আসগর ফরহাদি পরিচালিত মুভি A Hero (2021)।
আসগর ফরহাদির আমি হিউজ ফ্যান। যেই লোক মাত্র সাতটা (এখন নয়টা হয়েছে) মুভি বানিয়ে তিনবার অস্কারে যায় এবং দুইবার অস্কার পায়, তাও বয়স চল্লিশ পেরুনোর আগে, তার ফ্যান না হয়ে উপায় কী?
আসগর ফরহাদির সবগুলো মুভিই দেখে শেষ করেছি। ইনক্লুডিং সে ফেমাস হওয়ার আগেরগুলো। এবং আমার মতে, সে বিদেশের সেটিংয়ে না গিয়ে ইরানের পটভূমিতে সিনেমা বানালেই তার বেস্টটা দিতে পারে।
-
সংকলিত: ফ্রিতে পড়ুন নতুন বইয়ের অধ্যায়!
ইংরেজি বিভিন্ন পত্রিকায়, বিশেষ করে ম্যাগাজিনগুলোতে আপনি প্রায়ই দেখবেন, নতুন কোনো বই প্রকাশিত হওয়ার আগেই তারা বইটির এক বা একাধিক অধ্যায় প্রকাশ করে থাকে।
এর ফলে দুটো লাভ হয়। একদিকে লেখক এবং প্রকাশক তাদের নতুন বইয়ের সংবাদ সহজে আগ্রহী পাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে পারে। অন্যদিকে পাঠকরা সেই নতুন বইয়ের এক বা একাধিক অধ্যায় পড়ে নতুন কোনো বিষয় সম্পর্কে জানতে পারে, লেখকের লেখনীর সাথে পরিচিত হতে পারে, এবং বইটি কেনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সংকলিত ডট কমের মাধ্যমে আমরা ঠিক এই কাজটিই করতে যাচ্ছি। সম্প্রতি প্রকাশিত বা নতুন প্রকাশিতব্য বিভিন্ন বইয়ের নির্বাচিত এবং আকর্ষণীয় এক বা একাধিক অধ্যায়ের সংকলন আমরা এই ওয়েবসাইটের পাঠকদের সামনে তুলে ধরব। পাঠক সেগুলো পড়বে, নতুন কিছু জানবে, মুগ্ধ হবে, এবং সেই মুগ্ধতার পরিমাণ বেশি হলে আশা করা যায় বইগুলো কিনবে।
-
ফটোকপিয়ার: পার্টি সংস্কৃতি এবং যৌন নিপীড়নের গল্প
দেখলাম নেটফ্লিক্সের ইন্দোনেশিয়ান মুভি ফটোকপিয়ার (Photocopier (2021)) পাওয়ারফুল কাহিনী। ক্রাইম, থ্রিলার, মিস্ট্রি জনরার।
ভার্সিটিতে পড়ুয়া এক মেয়ে, সুরিয়ানি তার নাট্যদলের সদস্যদের সাথে পুরস্কার পাওয়া উদযাপন করতে যায়। সেখানে সবার পাল্লায় পড়ে ড্রিংক করে অচেতন হয়ে পড়ে। রাত তিনটার সময় এক ড্রাইভার তাকে অচেতন, মাতাল অবস্থায় ঘরে পৌঁছে দিয়ে যায়।
পরদিনই কীভাবে যেন নেটে তার ড্রিঙ্ক করে অচেতন হয়ে পড়ে থাকার ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। ফলে তার ভার্সিটির স্কলারশিপ বাতিল হয়ে যায়। ওদিকে রাত তিনটা বাজে অপরিচিত পুরুষ মাতাল অবস্থায় ঘরে পৌঁছে দেওয়ার কারণে পড়া-প্রতিবেশীরাও নানান কথা বলতে থাকে। মুসলমান মেয়ে হয়ে এরকম আচরণ করায় সুরিয়ানিকে তার বাবা ঘর থেকে বের করে দেয়।
-
শিবব্রত বর্মনের বানিয়ালুলু: চমৎকার একটি সাইফাই ফ্যান্টাসি গল্পসমগ্র
বানিয়ালুলু বইয়ের লেখক শিবব্রত বর্মনের কোনো লেখা আমি আগে পড়েছি বলে মনে পড়ে না। দুর্ভাগ্যটা আমারই। কারণ এখন দেখতে পারছি তিনি যথেষ্ট বিখ্যাত লেখক, প্রথম-আলোর সাহিত্য সাময়িকীতে নিয়মিত তার লেখা প্রকাশিত হয় এবং সবচেয়ে বড় কথা, তিনি লেখেনও দুর্দান্ত।
সম্প্রতি চরকি অ্যাপে রিলিজ পাওয়া “ঊনলৌকিক” ওয়েব সিরিজটা দেখতে গিয়েই মূলত আমি শিবব্রত বর্মন সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে উঠলাম। সিরিজটা নিয়ে আলাদাভাবে আলোচনা করেছি, এখানে তাই আর বিস্তারিত বলছি না।
কিন্তু যে ব্যাপারটা ঘটেছে, সিরিজটার প্রতিটা এপিসোডের কাহিনী এমন অদ্ভুত আর এত চমৎকার, সেটা দেখতে গিয়েই আমার মনে হয়েছে, এর চিত্রনাট্য সরাসরি ওয়েব সিরিজের জন্য লেখা হয়নি। বরং আগে সম্ভবত ছোটগল্প আকারে লেখা হয়েছিল, পরে সেখান থেকে অ্যাডাপ্ট করে চিত্রনাট্য তৈরি করা হয়েছে।
-
নেটফ্লিক্সের গাদ্দাফি এপিসোড: কতটুকু সত্য? কতটুকু প্রপাগান্ডা?
নেটফ্লিক্সের How to Become a Tyrant এর পঞ্চম পর্বটা সাবেক লিবীয় নেতা মোয়াম্মার আল-গাদ্দাফিকে নিয়ে – কীভাবে গাদ্দাফি পুরো সমাজব্যবস্থাকেই নতুন করে গড়ে তুলেছিল।
এপিসোডটা মোটের উপর ভালো। এটার শুরুটাও ভালো ছিল। এখানে স্বীকার করা হয়েছে, গাদ্দাফি শুরুতে জেনুইনলিই মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তন আনতে চেয়েছিল। বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র একটা রাষ্ট্রের জনগণকে মুক্তি দিতে চেয়েছিল। কিন্তু এরপর ধীরে ধীরে নিজেই নিজেকে দেশের জন্য অপরিহার্য্য বলে বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল।
গাদ্দাফির যে সমালোচনাগুলো করা হয়েছে, তার অনেকগুলোই জেনুইন। গাদ্দাফি আসলেই সব ধরনের প্রেস ফ্রিডম, ট্রেড ইউনিয়ন, স্টুডেন্ট ইউনিয়ন – সোজা কথায় সাধারণ মানুষের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সব ধরনের উপায়কে নিষিদ্ধ করেছিল। এবং ৭৬ সালের ৭ই এপ্রিল সত্যিসত্যিই ছাত্র আন্দোলনের আয়োজকদেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিল।