জাতিসংঘের প্রতিনিধির পদত্যাগ: লিবিয়ার শান্তি কি তবে আরো পেছাল? (প্রথম আলোতে প্রকাশিত)

আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করার পর গত ২ মার্চ, সোমবার বিকেলে হঠাৎ করেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন লিবিয়ায় নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ঘাসান সালামে। তার পদত্যাগের ঘোষণাটি এমন এক সংকটময় মুহূর্তে এলো, যখন ১১ মাস ধরে চলা ত্রিপোলির গৃহযুদ্ধে এক অনিশ্চিত এবং ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি বিরাজ করছিল।

সোমবার বিকেলে নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে আরবিতে টুইট করে সালামে জানান, স্বাস্থ্যগত কারণে তার পক্ষে আর এই চাপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, ফলে তিনি জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। ৬১ বছর বয়সী সালামের পদত্যাগের পেছনে তার শারীরিক সুস্থতা অবশ্যই একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে লিবিয়ার রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষ করলে সন্দেহ হয়, সালামে হয়তো লিবিয়ার পরিস্থিতির উন্নতির কোনো সম্ভাবনা দেখতে না পেয়ে হতাশ হয়েই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

২০১১ সালে সাবেক নেতা মোয়াম্মার আল-গাদ্দাফির পতনের পর থেকে এ পর্যন্ত জাতিসংঘ লিবিয়াতে তাদের সাপোর্ট মিশনের (UNSMIL) অধীনে মোট ছয় জন বিশেষ প্রতিনিধিকে নিয়োগ দিয়েছে। প্যারিস ভিত্তিক লেবানিজ অধ্যাপক এবং সাবেক কূটনীতিক ঘাসান সালামে ছিলেন তাদের মধ্যে সর্বশেষ জন। সালামে লিবিয়াতে এসেছিলেন অত্যন্ত সংকটময় মুহূর্তে। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে লিবিয়ায় পদার্পণ করার পর থেকেই তার লক্ষ্য ছিল লিবিয়ার বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে বিভেদ কমিয়ে তাদেরকে একত্রিত করার, লিবিয়ার অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান করার এবং লিবিয়ার উপর বিদেশী শক্তিগুলোর হস্তক্ষেপ কমিয়ে আনার।

এই লেখাটি গত ৯ মার্চ, ২০২০ তারিখে দৈনিক প্রথম আলোর আন্তর্জাতিক মতামত বিভাগে প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম আলোর লেখাটি পড়তে পারেন এখান থেকে

পূর্বের অন্যান্য প্রতিনিধিদের তুলনায় সালামে ছিলেন লিবিয়ার জন্য অধিকতর উপযোগী। আরবি ভাষাভাষী হওয়ায় তার পক্ষে সব ধরনের লিবিয়ানদের সাথে যোগাযোগ করা, তাদের চাওয়া-পাওয়া বুঝতে পারা তুলনামূলকভাবে সহজ ছিল। লিবিয়ার মতো চ্যালেঞ্জিং পরিবেশেও তার অতীতে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল। গৃহযুদ্ধ পরবর্তী লেবাননে রফিক হারিরির সরকারে তিনি সংস্কৃতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এছাড়াও ২০০৩ সালে তিনি ছিলেন জাতিসংঘের ইরাক সহযোগিতা মিশনের (UNAMI) রাজনৈতিক উপদেষ্টা, যেখানে তিনি ইরাকের বিভিন্ন পক্ষকে এক প্লাটফর্মে আনার ব্যাপারে কাজ করেছিলেন।

কিন্তু এতো অভিজ্ঞতা থাকার পরেও এবং আপ্রাণ চেষ্টা করা সত্ত্বেও আড়াই বছর শেষে সালামে যখন লিবিয়া ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখন তার অর্জন বলতে কেবলমাত্র কিছু অর্থনৈতিক সংস্কার। তার উদ্যোগে এবং আইএমএফের পরামর্শে লিবিয়ার সেন্ট্রাল ব্যাংক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় কিছু সংস্কার আনার পর গত বছরটা ছিল ২০১৪ সালের পর প্রথমবারের মতো অর্থনৈতিক দিক থেকে লিবিয়ার জন্য ভালো একটি বছর। কিন্তু এর বাইরে তার সময়ে লিবিয়া প্রত্যক্ষ করেছে বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে একাধিক বড় আকারের যুদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক পরাশক্তিগুলোর লিবিয়ার উপর নজিরবিহীন হস্তক্ষেপ।

ঘাসান সালামে তার কর্মকাণ্ড দিয়ে লিবিয়ার কোনো পক্ষের রাজনীতিবিদদেরকেই সন্তুষ্ট করে যেতে পারেননি। তার পদত্যাগের সংবাদ শুনে পূর্বাঞ্চলীয় সংসদ, হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টিটিভের (HOR) এক সদস্য, হামাদ আল-বান্দাক মন্তব্য করেছেন, নৌকা ডুবে যাওয়ার আগেই সালামে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে আন্তর্জাতিকভাবে সমর্থিত ত্রিপোলি ভিত্তিক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ হাই কাউন্সিল অফ স্টেটের (HCS) একজন সদস্য, আব্দুল কাদের হোয়েইলি মন্তব্য করেছেন, সালামে ছিলেন জাতিসংঘের ছয়জন প্রতিনিধির মধ্যে সবচেয়ে অযোগ্য এবং ব্যর্থ।

জাতিসংঘের প্রতিনিধির পদত্যাগ

কিন্তু লিবিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের অধিকাংশই এই দুইজনের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। তাদের মতে সালামে সত্যি সত্যই লিবিয়ার সংকটের সমাধান চেয়েছিলেন। তার আন্তরিকতার কোনো ত্রুটি ছিল না। কিন্তু তিনি যে ব্যর্থ হয়েছেন, তার দায় একদিকে লিবিয়ার রাজনীতিবিদদের, অন্যদিকে বিদেশী শক্তিগুলোর এবং অভিভাবক সংগঠন হিসেবে জাতিসংঘের। জাতিসংঘের যে সদস্য রাষ্ট্রগুলো লিবিয়ার বিবাদমান পক্ষগুলোকে আড়ালে থেকে সাহায্য করে আসছে, তাদের সদিচ্ছা ছাড়া জাতিসংঘের একজন প্রতিনিধির পক্ষে সফল হওয়া প্রায় অসম্ভব।

দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই লিবিয়ার রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের লক্ষ্যে ঘাসান সালামে চার ধাপের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন জাতিসংঘের পূর্ববর্তী প্রতিনিধির সময়ে পাশ হওয়া লিবিয়ান পলিটিক্যাল অ্যাগ্রিমেন্ট (LPA)-এর ত্রুটিগুলো সংশোধন করে সেটাকে আরো বাস্তবসম্মত করতে। উদাহরণস্বরূপ তিনি চেয়েছিলেন আন্তর্জাতিকভাবে সমর্থিত জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের (GNA) প্রেসিডেন্সি কাউন্সিলের সদস্য সংখ্যা ৯ থেকে কমিয়ে মাত্র ৩-এ আনতে। কিন্তু দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার পরেও তিনি লিবিয়ানদেরকে তার এ প্রস্তাবে রাজি করাতে পারেননি।

আন্তর্জাতিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে সালামে বিদেশীদের সাথেও লিবিয়ার ব্যাপারে অনেক বৈঠক করেছেন। কিন্তু তিনি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন লিবিয়ানদের বিভিন্ন গোত্রের সাথে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে, বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সাথে আলোচনার উপর। অ্যাকশন প্ল্যান ব্যর্থ হওয়ার পর ২০১৯ সালে তিনি উদ্যোগ নিয়েছিলেন রাজনৈতিক, সামরিক এবং অর্থনৈতিক – এই তিন ধাপে লিবিয়ার সমস্যা সমাধানের পথে এগোনোর। তার সর্বশেষ প্রচেষ্টা ছিল লিবিয়ার সকল শ্রেণির প্রতিনিধিদেরকে নিয়ে একটি ন্যাশনাল কনফারেন্সের আয়োজন করা।

সালামের পরিকল্পনা ছিল নয় মাস ধরে লিবিয়ার ৪০টি শহরে ৭০টি বৈঠকের মধ্য দিয়ে লিবিয়ার সকল দলমতের, সকল শ্রেণির প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করে লিবিয়াকে তিনি নতুন একটি সংবিধান প্রণয়ন এবং নির্বাচনের দিকে এগিয়ে নিবেন। তার এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে সবচেয়ে বড় সম্মেলনটি হওয়ার কথা ছিল গত বছরের এপ্রিলের ১৪ তারিখে। কিন্তু সম্মেলনের ফলাফল পক্ষে আসবে না অনুমান করতে পেরে নির্ধারিত তারিখের ১০ দিন আগে আকস্মিকভাবে ত্রিপোলি দখলের লক্ষ্যে সামরিক অভিযান শুরু করে দেন লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের সেনাবাহিনী প্রধান, মার্শাল খালিফা হাফতার। ভেস্তে যায় ঘাসান সালামের সকল পরিকল্পনা।

গত বছরের এপ্রিলের ৪ তারিখে শুরু হওয়া ত্রিপোলি দখলের যুদ্ধ এখনও চলছে। সালামে একাধিকবার চেষ্টা করেছেন যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে উভয় পক্ষকে রাজি করাতে। কিন্তু তার প্রচেষ্টা একবারও আলোর মুখ দেখেনি। বরং হাফতারের ত্রিপোলি আগ্রাসনের পক্ষে দিনে দিনে বিদেশী সাহায্যের পরিমাণ বৃদ্ধিই পেয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আনা যুদ্ধের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব বাতিল হয়ে গেছে বারবার। কখনো ফ্রান্সের, কখনো রাশিয়ার আপত্তির কারণে।

পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে কেবলমাত্র গত বছরের ডিসেম্বরে, যখন তুরস্ক সরাসরি ত্রিপোলি ভিত্তিক সরকারকে সাহায্য করার জন্য সেনাবাহিনী প্রেরণের ঘোষণা দেয়। এর পরপরই প্রথমে রাশিয়া এবং তুরস্কের উদ্যোগে মস্কোতে, এবং পরবর্তীতে জার্মানির উদ্যোগে বার্লিনে দুটি শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯ জানুয়ারির বার্লিন সম্মেলনে বিশ্বের ১২টি দেশের নেতারা লিবিয়ার যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে একমত হন। তারা প্রতিজ্ঞা করেন, লিবিয়ার যেকোনো পক্ষের কাছে অস্ত্র সরবরাহের ব্যাপারে ২০১১ সাল থেকেই জাতিসংঘের যে নিষেধাজ্ঞা বলবত আছে, সেটা তারা মেনে চলবেন।

কিন্তু তাদের সেই প্রতিজ্ঞা ছিল কেবলই কথার কথা। পরদিন থেকে দুই পক্ষই অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে লিবিয়াতে অস্ত্রশস্ত্র পাঠাতে শুরু করে। একদিকে আরব আমিরাত শতাধিক ফ্লাইটে করে হাফতারের উদ্দেশ্যে কয়েক হাজার টন মাঝারি এবং ভারি অস্ত্রশস্ত্র প্রেরণ করে। অন্যদিকে তুরস্ক ত্রিপোলির সরকারের উদ্দেশ্যে জাহাজ বোঝাই করে ট্যাংক, সাঁজোয়া যান, ড্রোন এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম প্রেরণ করে।

আরো পড়ুন: লিবিয়ার গৃহযুদ্ধ ও প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবস্থা: বণিক বার্তায় প্রকাশিত

মূলত বার্লিন সম্মেলনের পরেই ঘাসান সালামে হয়তো বুঝতে পারেন, বিশ্বনেতারা যতই আশ্বাস দেক, তারা আসলে লিবিয়ার সমস্যার সমাধান চায় না। তার হতাশা আরো বৃদ্ধি পায় যখন বার্লিনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী লিবিয়ার দুই পক্ষ জেনেভাতে আলোচনার জন্য একত্রিত হয়েও পরবর্তীতে সেখান থেকে ওয়াক আউট করে। অন্যদিকে বার্লিন সম্মেলনের পর প্রথম কয়েক সপ্তাহ ত্রিপোলির ফ্রন্টলাইনে মোটামুটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে তা ভেঙ্গে পড়ে। ২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার হাফতারের বাহিনী ত্রিপোলি লক্ষ্য করে প্রায় অর্ধশত গ্র্যাড মিসাইল নিক্ষেপ করে।

পদত্যাগের সময় স্বাস্থ্যগত কারণ উল্লেখ করলেও সাম্প্রতিক সময়ে ঘাসান সালামের বিভিন্ন বক্তব্যে পরিষ্কারভাবেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি অসন্তোষ উঠে এসেছে। ডিসেম্বরের শেষের দিকে তিনি বলেছিলেন, যদি রাষ্ট্রগুলো নিজেদের পাশ করা রেজোল্যুশন প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সেটা মারাত্মক ব্যাপার। কিন্তু যে রাষ্ট্রগুলো নিজেরা ভোট দিয়ে এই রেজোল্যুশনগুলো পাশ করিয়েছে, এরপর তারা নিজেরাই যদি সক্রিয়ভাবে সেগুলো অমান্য করে, তাহলে সেটা আরো ভয়াবহ।

ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখে সাংবাদিকদের সামনে সালামে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, তিনি তাদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুত সাহায্য পাননি। যারা যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে, তাদের উপর চাপ প্রয়োগের অনেক উপায় জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর আছে। কিন্তু তারা সেটা করেনি। তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন এই বলে, “যখন কামান তার কাজ করে যেতে থাকে, তখন পরিস্থিতির অগ্রগতি অসম্ভব।” এর দুই দিন পরেই তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

লিবিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে সফল হওয়ার সম্ভাবনা এতোই কম, এখানে কেউ জাতিসংঘের প্রতিনিধির পদ নিয়ে আসতেই চায় না। ২০১৭ সালে ২৮ জন ব্যক্তি এই পদের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার পর ২৯ তম ব্যক্তি হিসেবে ঘাসান সালামে এখানে আসতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু শূন্য অর্জনেই ফিরে যেতে হয়েছে তাকে। নতুন একজন প্রতিনিধিকে খুঁজে পেতে আরো কত মাস লাগবে, কেউ জানে না। নতুন প্রতিনিধি আসলেও পরিস্থিতির বিশেষ কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। বরং সালামে আড়াই বছরে লিবিয়াকে যতটুকু বুঝেছিলেন, সমাধানের পথে যতটুকু এগিয়েছিলেন, তার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে সেটা আবারও পিছিয়ে গেল। নতুন প্রতিনিধিকে সবকিছু আবার শূন্য থেকেই শুরু করতে হবে।

Mozammel Hossain Toha
Mozammel Hossain Toha

জন্মের পর থেকেই লিবিয়ায় আছি। ২০১১ সালের গৃহযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছি একেবারে সামনে থেকে। আর সে কারণেই পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়া সত্ত্বেও আগ্রহ গড়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস এবং রাজনীতিকে ঘিরে।

নিয়মিত লেখালেখি করছি সোশ্যাল মিডিয়ায়। আলোচনা করছি ইউটিউবে। এখন পর্যন্ত তিনটা বই প্রকাশিত হয়েছে: স্পাই স্টোরিজ, স্পাই স্টোরিজ ২ এবং গল্পগুলো সিরিয়ার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *