মুভি রিভিউ
-
অল দ্য প্রেসিডেন্টস মেন: ওয়াটারগেট ক্যালেঙ্কারির তদন্ত নিয়ে যে মুভি
পলিটিক্যাল থ্রিলার মুভিগুলো আমার দারুণ পছন্দের। আর সেটা যদি সত্য কাহিনী অবলম্বনে হয়, তা হলে তো কথাই নেই। অল দ্যা প্রেসিডেন্টস মেন (All The President’s Men) সেরকমই একটা মুভি, যার কাহিনী আবর্তিত হয়েছে ওয়াটারগেট ক্যালেঙ্কারির তদন্তকে ঘিরে।
দুই দুঃসাহসী সাংবাদিক কী অসাধারণ দক্ষতা এবং সাহসিকতার সাথে ওয়াটারগেট ক্যালেঙ্কারির পেছনের ঘটনা উন্মোচন করে শেষপর্যন্ত আমেরিকার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোন প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে, সেই কাহিনীর সফল চিত্রায়ন এই মুভিটি। বলা যায় এই ক্যাটাগরির এটাই সেরা মুভি।
-
মুভি বনাম উপন্যাস: কোনটা ভালো?
অধিকাংশ মানুষেরই ধারণা, কোনো উপন্যাস অবলম্বনে মুভি বানানো হলে মুভিটা উপন্যাসের মতো ভালো হয় না। উপন্যাসে অনেক বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়, কল্পনার দৃষ্টি দিয়ে সবকিছু দেখা যায়, মুভিতে সেই সুযোগ থাকে না।
এটা অনেকাংশে সত্য, কিন্তু সব সময় অবশ্যই না। এবং এই যে অনেকাংশেই সত্য, এর মধ্যেও একটা ঘাপলা আছে। ঘাপলাটা কী? ব্যাখ্যা করছি।
-
দ্য ম্যাসেজ: গাদ্দাফির কল্যাণে যেভাবে আলোর মুখ দেখেছিল সিনেমাটি
হযরত মুহাম্মদ (স)-এর জীবনী নিয়ে নির্মিত দ্য ম্যাসেজ (The Message) তথা আর-রিসালাহ মুভিতে বদরের যুদ্ধের একটা সিন আছে। সেখানে যুদ্ধের পূর্বে মুসলমানদেরকে একটা কুয়া থেকে পানি তুলতে দেখা যায়। বিখ্যাত লিবিয়ান পর্যটক ওসামা থিনির পোস্ট অনুযায়ী, ফিচার ইমেজের ছবির এই জিনিসটাই হচ্ছে সেই কুয়াটা। জায়গাটা লিবিয়ার দক্ষিণে ওবারি শহরের নিকটে, সাহারা মরুভূমিতে।
-
দ্য (টর্চার) রিপোর্ট: যে রিপোর্টে আছে সিআইএর বন্দী নির্যাতনের কাহিনী
এই লেখাটি একই শিরোনামে আরো বিস্তারিত আকারে প্রকাশিত হয়েছে Roar বাংলায়। সেখান থেকে মূল লেখাটি পড়তে পারেন এই লিঙ্ক থেকে।
আবু জুবায়দা ছিল আল-কায়েদার মাঝারি পর্যায়ের একজন নেতা। ৯/১১ এর সন্ত্রাসী হামলার কয়েক মাস পর, ২০০২ সালের ২৮ মার্চ পাকিস্তানের ফয়সালাবাদের আল-কায়েদার এক সেফ হাউজে যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, সিআইএ এবং এফবিআই।
গ্রেপ্তারের সময় আবু জুবায়দা গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু তাকে চিনতে পেরে সিআইএ এবং এফবিআই তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করে। মোটামুটি সুস্থ হওয়ার পর সিআইএ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। কিন্তু তার আগেই, হাসপাতালের বিছানায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন পরবর্তীতে এফবিআই থেকে পদত্যাগ করা স্পেশাল এজেন্ট আলি সুফান।
-
ক্যাথারিন গান: যে স্পাই ইরাক যুদ্ধ থামিয়ে দিতে চেয়েছিল
হুইসেল ব্লোয়ারদের কথা উঠলেই আমাদের মনে পড়ে এডওয়ার্ড স্নোডেন কিংবা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের কথা, কিংবা বড়জোর পেন্টাগন পেপার্সের ড্যানিয়েল এলসবার্গের কথা। সন্দেহ নেই, তাদের প্রত্যেকের কাজই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু তারা মার্কিন সরকারের টপ সিক্রেট তথ্যগুলো প্রকাশ করেছেন বা করতে পেরেছেন সময়ের অনেক পরে।
সেই তুলনায় ক্যাথারিন গান এক ব্যতিক্রমী হুইসেল ব্লোয়ার। ২০০৩ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি যখন জানতে পারেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য মিলে অন্যায়ভাবে ইরাক আক্রমণের জন্য জাতিসংঘের ভোট জালিয়তি করতে যাচ্ছে, তখন তিনি সময়ের অনেক আগেই সেটা ফাঁস করে দিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন সময় থাকতেই অন্যায় একটা যুদ্ধ থামিয়ে দিতে। বলাই বাহুল্য, তিনি ব্যর্থ হয়েছেন, কিন্তু সন্দেহ নেই তিনি বিশ্বের সামনে উদাহরণ সৃষ্টি করে গেছেন।
-
জেড (Z): গ্রীসের সামরিক স্বৈরশাসনের উপর অসাধারণ এক পলিটিক্যাল থ্রিলার
গ্রীক পরিচালক কোস্তা গাভরাস (Costa-Gavras) এর মুভি প্রথমে দেখেছিলাম ২০১০ সালের দিকে, মিসিং (Missing)। চিলির সামরিক অভ্যুত্থান, গণহত্যা এবং সেই অভ্যুত্থানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোপন ভূমিকার উপর সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত অসাধারণ একটা পলিটিক্যাল থ্রিলার।
এরপর আইএমডিবিতে (IMDB – Internet Movie Database) গিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে জানতে পারলাম, এই পরিচালকের সবচেয়ে বেশি রেটিং পাওয়া মুভি হচ্ছে আরেকটা পলিটিক্যাল থ্রিলার, Z (1969)। আইএমডিবি রেটিং 8.2, কিন্তু ফ্রেঞ্চ ভাষায় নির্মিত সিনেমাটার ভোটসংখ্যা কম হওয়ায় আইএমডিবির অ্যালগরিদম অনুযায়ী এটা টপ লিস্টে উঠতে পারেনি।
-
ন ডরাই চলচ্চিত্রে আয়েশা বিতর্কের সমস্যা
ন ডরাই চলচ্চিত্রটার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিষয়বস্তু এবং দৃশ্যের পাশাপাশি এর বিরুদ্ধে সমালোচকদের এবং মামলাকারীর একটা গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ হচ্ছে, মূল চরিত্রের নাম আয়েশা রাখার মধ্য দিয়ে এখানে নাকি রসূল (স) এর স্ত্রী হযরত আয়েশা (রা) এর অবমাননা করা হয়েছে।
ন ডরাইয়ের আয়েশা, কিংবা ভূতের বাচ্চা সোলায়মানের সোলায়মান, এ ধরনের নাম নিয়ে বিতর্কের ভবিষ্যৎ হলো, সেফ সাইডে থাকার জন্য আগামী দিনগুলোতে কোনো গল্প-উপন্যাস বা চলচ্চিত্রে কেউ কোনো ইসলামি নাম ব্যবহার করবে না। আধুনিক বাংলা নাম ব্যবহার করবে।
এখন যারা এই নামগুলো নিয়ে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলছে, তখন তারাই আবার এর পেছনে ষড়যন্ত্র খুঁজে পাবে – যেখানে গ্রাম বাংলার প্রতিটা ঘরে ঘরে আরবি/ইসলামি নামই বেশি ব্যবহৃত হয়, সেখানে গল্প-উপন্যাসে বাংলা/হিন্দুয়ানি নাম ব্যবহার করার মধ্য দিয়ে বাস্তবে কীভাবে সমাজের উপর ইসলামের প্রভাবকেই অস্বীকার করা হচ্ছে!
-
দ্য প্রেসিডেন্ট: এক পতিত স্বৈরাচারের গল্প
মহাপরাক্রমশালী প্রেসিডেন্ট তিনি। তার আঙ্গুলি হেলনে পুরো দেশ উঠে বসে। এক রাতে নিজের প্রাসাদে কাঁচের দেয়ালের ভেতরে বসে নিজের রাজধানী, আলোকসজ্জায় জ্বলজ্বল করা সিটি অফ লাইটসের দিকে তাকিয়ে সেটাই ভাবছিলেন তিনি। পাশে বসে ছিল তার কিশোর নাতি।
প্রেসিডেন্টের ছেলেকে বিদ্রোহীরা হত্যা করেছিল। নাতিই ছিল তার একমাত্র উত্তরাধিকার। নাতিকে তিনি বোঝাচ্ছিলেন, বড় হলে তাকেই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে হবে। কিন্তু নাতির তখন দেশ পরিচালনার ব্যাপারে কোনো আগ্রহ ছিল না। সে চাইছিল আইসক্রিম খেতে।
নাতিকে ক্ষমতার গুরুত্ব বোঝানোর জন্য তিনি টেলিফোন করলেন বিদ্যুৎ বিভাগে। নাতি বললেন, দেখছ এই যে কী সুন্দর আলো জ্বলজ্বল করছে? আমার নির্দেশে দেখবে এক মুহূর্তের মধ্যে সব কীভাবে অন্ধকার হয়ে যাবে, আমার আমার নির্দেশেই কীভাবে সব আলোকিত হয়ে উঠবে!
প্রেসিডেন্ট বিদ্যুৎ বিভাগকে নির্দেশ দিলেন, আমার প্রাসাদ ছাড়া পুরো শহরের ইলেক্ট্রিসিটি কেটে দাও। মুহূর্তের মধ্যে পুরো শহর অন্ধকার হয়ে গেল। নাতি মজা পেয়ে গেল। দাদার কাছ থেকে ফোনের রিসিভার নিয়ে সে নিজেই এবার নির্দেশ দিল, অন করে দাও। সাথে সাথে জ্বলে উঠল শহরের সব লাইট।