মুভি রিভিউ
-
দ্য মৌরিতানিয়ান: গুয়ান্তানামো বের এক নির্দোষ বন্দীর গল্প
গুয়ান্তানামো বে কারাগারের এক বন্দীর উপর চমৎকার একটা মুভি দেখলাম – দ্য মৌরিতানিয়ান – The Mauritanian (2021)। ড্রামা, তার উপর বেজড অন ট্রু স্টোরি, সো ডোন্ট বদার উইদ স্পয়লার অ্যালার্ট।
নাইন ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার কয়েকমাস পর আমেরিকার চাপে মৌরিতানিয়ার এক প্রত্যন্ত গ্রামের একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে মোহাম্মাদু ওয়েল্দ স্লাহি নামের এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নিয়ে যায় দেশটির নিরাপত্তাবাহিনী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা তাকে তুলে দেয় আমেরিকানদের হাতে।
পরবর্তী ছয় বছর পর্যন্ত সম্পূর্ণ নিখোঁজ থাকে স্লাহি। কেউ তার কোনো সংবাদ দিতে পারে না। শেষ পর্যন্ত এক মার্কিন ডিফেন্স লয়্যার, ন্যান্সি হল্যান্ডার তার খোঁজ পায় কিউবার গুয়ান্তানামো বে কারাগারে।
-
বর্ন এ কিং: রূপালি পর্দায় বাদশাহ ফয়সাল
বর্ন এ কিং (Born a King) (2019) – পুরাই আনএক্সপেক্টেড একটা মুভি। সৌদি বাদশাহ ফয়সাল বিন আব্দুল আব্দুল আজিজের জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের চিত্রায়ন।
সিনেমার কাহিনী ১৯১৯ সালের। সে সময় ব্রিটিশ সরকার আব্দুল আজিজ বিন সৌদকে ব্রিটেন সফরের নিমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু আব্দুল আজিজ তখন শেরিফ হুসেইনের সাথে যুদ্ধের আশঙ্কায় দেশ ত্যাগ করার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না। তার পরিবর্তে তিনি ইংল্যান্ডে পাঠান তার ছেলে, ভবিষ্যত বাদশাহ ফয়সালকে। সে সময় বাদশাহ ফয়সাল ছিলেন মাত্র ১৪ বছর বয়সী!
-
লা মিজারেবলস: ফ্রান্স কাঁপানো রায়টের সত্য ঘটনা নিয়ে যে মুভি
চমৎকার একটা ফ্রেঞ্চ মুভি লা মিজারেবলস (Les Misérables)। লুজলি বেজড অন এ ট্রু স্টোরি। এবং স্টোরিটা ঘটেছিল পরিচালকের নিজের জীবনেই!
মালিয়ান বংশোদ্ভূত পরিচালক লাজ লি ছিলেন ফ্রান্সের দরিদ্র এলাকার এক রাবিশ কালেক্টরের ছেলে। ছোটকাল থেকেই কৃষ্ণাঙ্গ গরীবদের উপর ফ্রান্সের শ্বেতাঙ্গ পুলিশের নির্যাতন দেখে বড় হয়েছেন তিনি। একটু বড় হওয়ার পর যখন হাতে একটি হ্যান্ডহেল্ড ভিডিও ক্যামেরা পান, তখন থেকে সেটা দিয়ে পুলিশি নির্যাতনের ভিডিও করতে শুরু করেন তিনি।
-
এলি কোহেন সুপার স্পাই ছিল না: আল-জাজিরা ডকুমেন্টারি
এলি কোহেনের কথা মনে আছে? সেই ইসরায়েলি “সুপার স্পাই”, যাকে নিয়ে নেটফ্লিক্স The Spy নামে সিরিয়াল তৈরি করেছে? সেই এলি কোহেনকে নিয়েই গতকাল আল-জাজিরা একটা ডকুমেন্টারি প্রকাশ করেছে। এবং এই ডকুমেন্টারির ভাষ্য নেটফ্লিক্সের “বেজড অন এ ট্রু স্টোরি” সিরিয়ালটার ভাষ্যের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
সিরিয়ালে এলি কোহেনকে মহান বীর হিসেবে দেখানো হয়। সে নাকি প্রায় সিরিয়ার ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টারও হয়ে যাচ্ছিল। তার সাথে নাকি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আমিন আল-হাফেজের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ৬৭ সালের যুদ্ধে জয়ের পেছনে নাকি তার বিশাল অবদান ছিল। এমনকি বাথ পার্টি যে ক্যু করেছিল, সেটাও নাকি তার অবদান ছিল। কিন্তু আল-জাজিরা বলছে, এ সবই অতিরঞ্জিত।
-
ম্যারেজ স্টোরি: একটি ডিভোর্সের গল্প
রোমান্টিক এবং কমেডি মুভি সাধারণত এড়িয়ে চলি। এখনও আমার প্রিয় রোমান্টিক মুভির নাম জিজ্ঞেস করলে সেই প্রাচীন আমলের রোমান হলিডে আর দ্য অ্যাপার্টমেন্টের নামই মুখে আসবে। কিন্তু গত বছরের ম্যারেজ স্টোরি (Marriage Story (2019)) মুভিটার নাম এত বেশি শুনেছি যে এটা না দেখে উপায় ছিল না।
নামে ম্যারেজ স্টোরি হলেও বাস্তবে এটা ডিভোর্স স্টোরি। এক আপাত সুখি দম্পতির ডিভোর্সের প্রস্তুতির কাহিনী। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চমৎকার মানুষ, দুজনের সম্পর্কও দারুণ, কিন্তু তারপরেও কোথায় যেন একটা সুর কেটে গেছে। স্ত্রীর মনে হচ্ছে স্বামী তার চাওয়া-পাওয়াকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে না। ফলে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেয় সে।
ডিভোর্সের প্রস্তুতির শুরুটা হয় চমৎকার বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে। কিন্তু এরপর ডিভোর্স লয়াররা জড়িয়ে পড়ে। সম্পত্তির ভাগাভাগি, ছেলের অভিভাবকত্ব প্রভৃতি নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে দুনিয়ার ইতিহাস টেনে আনতে থাকে। টাকা খরচ হতে থাকা পানির মতো। এক পর্যায়ে মনে হয়, ইজ দ্যাট রিয়েলি ওয়ার্থ ইট? দেখার সময় বারবার মনে হতে থাকে, ডিভোর্সটা যেন না হয়, যেন তারা আবার মিলে যায়।
সুন্দর মুভি। বিয়ের আগেই দেখে ফেলা উচিত। গত বছর অস্কার বেস্ট পিকচার নমিনেশন পেয়েছিল। অভিনয়ে অ্যাডাম ড্রাইভার এবং স্কারলেট জোহানসন, আর আইনজীবী চরিত্রে লরা ডার্ন। লরা ডার্ন বেস্ট সাপোর্টিং অ্যাকট্রেসে অস্কার পেয়েছিল। আইএমডিবি রেটিং 8.0।
আমার লেখা সবগুলো মুভি রিভিউ পড়তে ক্লিক করুন এখানে।
-
আনবিলিভ্যাবল: যৌন নিপীড়ন-বিরোধী চমৎকার একটা ক্রাইম থ্রিলার মিনিসিরিজ
বাবা-মা ছাড়া, ফস্টার হোমে বড় হওয়া টিনেজার কিশোরী ম্যারি এক রাতে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে রেপড হয়ে যায়। পুলিশ আসে, তদন্ত হয়, কিন্তু কোনো প্রমাণ মেলে না।
দরজা ভাঙ্গা হয়েছিল – এমন কোনো প্রমাণ নাই, পুরা ঘরে কোনো ফিঙ্গারপ্রিন্ট নাই, পুরা ঘরে কোনো ফিঙ্গারপ্রিন্টও নাই। প্রাথমিকভাবে কোনো প্রমাণ না পেয়ে এবং একেকজনের কাছে ম্যারির দেওয়া একেক রকম বর্ণনা শুনে পুলিশের সন্দেহ হয়, ভিকটিম হয়তো মিথ্যা কথা বলছে। আশেপাশের মানুষের মনোযোগ পাওয়ার জন্য মিথ্যা রেপের কাহিনী ছড়িয়েছে।
-
হোটেল মুম্বাই: তাজ হোটেলে অবরুদ্ধ ১২ ঘণ্টা
গত বছর দেখেছিলাম হোটেল মুম্বাই (Hotel Mumbai) (2018)। ২০০৮ সালের মুম্বাই সিরিজ অ্যাটাকের উপর নির্মিত অস্ট্রেলিয়ান মুভি।
ভারতের মুম্বাইয়ে পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্করে তৈয়বার ঐ সিরিজ আক্রমণে মোট ১৬৬জন নিহত হয়েছিল। মোট ১২টি কোর্ডিনেটেড অ্যাটাক হয়েছিল। এর মধ্যে মুভিতে শুধু মুম্বাইর তাজ হোটেলের আক্রমণটার উপরেই ফোকাস করা হয়েছে।
-
ম্যারি কোলভিনের প্রাইভেট ওয়ার
নিচের ছবি গাদ্দাফির সাথে ম্যারি কোলভিনের যে দৃশ্যটা দেখা যাচ্ছে, সেটা বাস্তবের না, A Private War সিনেমার। এবং এখানে যে গাদ্দাফিকে দেখা যাচ্ছে, তিনিও আসল গাদ্দাফি নন; সিনেমার অভিনেতা। তবে বাস্তবেও সানডে টাইমসের সাংবাদিক ম্যারি কোলভিন গাদ্দাফির সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। একবার না, একাধিক বার।
১৯৮৬ সালে রিগ্যান প্রশাসন যখন লিবীয় নেতা মোয়াম্মার আল-গাদ্দাফিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বাসভবনের উপর বিমান হামলা (অপারেশন এল-ডোরাডো ক্যানিয়ন) পরিচালনা করে, তখন ম্যারি কোলভিনই ছিলেন প্রথম সাংবাদিক, যিনি গাদ্দাফির সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন।